১২ টুকরা করে হত্যা: খুলনায় পাঁচজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট  

খুলনা মহানগরীতে হাবিবুর রহমান সবুজকে হত্যা করে লাশ ১২ টুকরা করার অভিযোগে পাঁচ জনকে আসামি করে চার্জশিট দাখিল করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই)।

সোমবার দুপুরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক শেখ আবু বকর মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। পরকীয়া প্রেম সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে পাঁচজন সরাসরি এই হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয় বলে জানিয়েছে পিবিআই।

চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন- সরদার আসাদুজ্জামান ওরফে আরিফ, অনুপম, খলিলুর রহমান, গাজী আবদুল হালিম এবং এ কে এম মোস্তফা চৌধুরী মামুন। এদের মধ্যে মোস্তফা মামুন পলাতক রয়েছেন। অন্য চার আসামি গ্রেপ্তারের পর থেকে কারাগারে। মামলার চার্জশিটে মোট ৪৬ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।

নিহত হাবিবুর রহমান সাতক্ষীরা সদরের উমরা এলাকার আবদুল হামিদ সরদারের ছেলে। তিনি সাতক্ষীরার একটি ইটভাটায় শ্রমিক সরবরাহ করতেন।

এর আগে গত ৭ মার্চ সকালে নগরীর শের-এ বাংলা রোড থেকে পলিথিনে মোড়ানো হাবিবুর রহমানের মরদেহের একটি অংশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে দুপুরে ফারাজীপাড়া রোডে ড্রেনের পাশ থেকে দুটি ব্যাগে থাকা মাথা ও দুই হাতসহ খণ্ড খণ্ড অংশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের ভগ্নিপতি গোলাম মোস্তফা বাদী হয়ে ৯ মার্চ খুলনা সদর থানায় অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এরপর র‌্যাব-৬ এর একটি টিম অভিযান চালিয়ে সরদার আসাদুজ্জামান ওরফে আরিফকে গ্রেপ্তার করে এবং পিবিআই খলিলুর রহমান ও গাজী আবদুল হালিমকে আটক করে। তবে মূল আসামি এ কে এম মোস্তফা চৌধুরী মামুনকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। তিনি ভারতে পালিয়ে গেছেন বলে পিবিআই দাবি করেছে।

জানা গেছে, হত্যাকাণ্ডের আগে নিহত হাবিবুর ও পলাতক আসামি এ কে এম মোস্তফা চৌধুরী মামুন পৃথক মামলায় কারাগারে ছিল। কারাগারে তাদের পরিচয় হয়। গত বছরের ডিসেম্বরে হাবিবুর কারাগার থেকে জামিনে বের হয়। হাবিবুর জেল থেকে বের হওয়ার সময় মোস্তফা তাকে কারামুক্ত করতে সহযোগিতার অনুরোধ জানায় এবং তার স্ত্রী রিক্তার মোবাইল নম্বর দেয়। কিন্তু হাবিবুর কোনো সহযোগিতা করেনি। এমনকি মোস্তফার স্ত্রী রিক্তার সঙ্গে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়ে। হাবিবুর রিক্তাকে নিয়ে কক্সবাজার, কুয়াকাটা ও ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়ায়। এছাড়া মোস্তফার বোনের সঙ্গেও পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে।

মোস্তফা কারাগার থেকে বেরিয়ে বিষয়টি জানতে পেরে হাবিবুরকে হত্যার পরিকল্পনা করে। তার অনুরোধে ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে আরও চার জন হাবিবুর হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়। ওই চার জনের সঙ্গেও মোস্তফার পরিচয় কারাগারে থাকাকালীন। গত ৬ মার্চ রাতে ফারাজীপাড়া এলাকায় আসাদের বাসায় হাবিবুরকে ডেকে চেতনানাশক ওষুধ মেশানো মিষ্টি খাওয়ানো হয়। হাবিবুর অচেতন হয়ে পড়লে পাঁচ জনে মিলে তাকে হত্যা করে এবং এরপর মরদেহ ১২ খণ্ড করা হয়।

 

টাইমস/এএইচ/এইচইউ

Share this news on:

সর্বশেষ